টম অ্যান্ড জেরী
~হ্যালো নিলয়
_____(নুপুর)
~ কেউ যদি কিছু বলে তার উওর দিতে হয়?
~যদি উওর না দেই?
~আপনার কি অনেক মন খারাপ?
~তাতে আপনার কোন সমস্যা অাছে?
~না মানে,আপনি এই ভাবে কথা বলছেন কেন?
~তা কিভাবে বলবো,
~একটু মিষ্টি করে বলতে পারেন না?
~আপনি কি আমার বিএফ লাগে যে মিষ্টি করে কথা বলতে হবে,
~তা হয় তো না,তাই বলে মানুষ হিসাবে আপনার কাছে ভালো ব্যবহার আশা করতেই পারি?
~পারবো না,
,~আপনি এত রেগে যাচ্ছেন কেন?
~রেগে যাওয়ার কথা বলেন কেন?
~আচ্ছা আর বলবো না, এই ধরেন ফুল।
~এই আপনার লজ্জা করে না একটা মেয়েকে ফুল দিতে?
~লজ্জা করবে কেন?
~তাও ঠিক আপনার লজ্জা বলে কিছু অাছে নাকি,
~আপনার ভালো ভেবে ফুলটা দিলাম
~তা কি ভালের জন্যে শুনি?
~মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছেন ভাবলাম ফুল কিনতে পারেননি মনে হয়।
~এখানে আমি ফুল কিনতে আসিনি বুঝলেন?
~তা কি হাওয়া খেতে এসেছেন?
~আপনি একটু বেশিই বুঝেন,আমি একটা ঠিকনা খুঁজছি
~ও,আপনি আমাকে বলতে পারেন এখনের সব কিছু আমি চিনি,
~আপনার দরকার নেই আমি একলাই খুঁজে নিতে পারবো
~ও আচ্ছা
.
চলে যতেই মেয়েটা আবার ডাকা ডাকি শুরু
.
~এখানে নিলয় কোন বাসাতে থাকে?(নুপুর)
~বলতে পারি একটা শর্তে
~কি শর্তে?
আপনার নামটা জানতে পারি?
~অবশ্যই।
~তা আপনার নামটা কি?
~নুপুর,
~অনেক সুন্দর নাম!
~হয়েছে।এই বার বলেন কোনটা নিলয়ের বাসা?
~আপনি আমদের বাসায় যাবেন?
~আজব তো আপনার বাসায় যাবো কেনো,
~না মানে আমি নিলয়,
~মিথ্যুক একটা আপনার মতলব জানি বাজে ছেলে একটা
~বিশ্বাস করতে হবে না ,দুইটা বিল্ডিং পরেই নিলয় সাহেবর বাসা, যান
.
মেয়েটা রেগে চলে গেলো।আমিকে মিথ্যুক,বাজে ছেলে বলা তাই ভুল করে দিলাম বাসার ঠিকানা, এখন কেমন মজা লাগে.......
.
তারপর শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে দরজায় কলিং বেল দিতেই সেই মেয়েটা।আমি কিছুটা অবাক,পালিয়ে যতে মেয়েটা আমার হাত ধরেই অ্যান্টি অ্যান্টি বলে চিৎকার দিতে লাগলো, মনে হয় যেন চোর ধরে ফেলেছে..........
.
~অ্যান্টি আপনাকে বলাম না একটা খারাপ ছেলে ভুল ঠিকানা দিয়ে ছিলো,এই সেই ছেলে(নুপুর)
.
~মা আমার কান ধরে এই তুই মানুষ হবি না,মেয়েটা কত কাঁদছে জানিস,বাসা না খুঁজে পেয়ে?(মা)
.
~লাগছে তো,আমি কি করব?আমি ঠিক ঠিকানা দিতে চেয়ে ছিলাম আমকে খারাপ ছেলে বলছে তাই ভুল করে ঠিকানা দিয়েছি(নিলয়)
.
~না অ্যান্টি মিথ্যা বলছে।(নুপুর)
.
~তুই নুপুর কে সরি বল(মা)
.
~পারবো না(নিলয়)
.
~তোর বাবা বাসায় একবার ফিরোক দেখ তোর কি অবস্থা করে?(মা)
.
~না,সরি নুপুর,(নিলয়)
.
~ওকে,আপনাকে দেখে নিবো পরে (নুপুর)
.
~আমিও দেখবো (নিলয়)
.
বাবাকে একটু ভয় করি তাই স্যরি টা বললাম না হলে কি যে করতাম তা আমি নিজেই জানি না।আমি নিলয় অনেক ভালো ছেলে কিন্তু মাঝে মাঝে একটু দুষ্ট প্রকৃতির ছেলে হয়ে যায়।আর যে মেয়ের সাথে বক বক করলাম সেই মেয়েটা নুপুর।মায়ের বান্ধবীর একমাত্র মেয়ে,কিছু দিনের জন্য বেড়াতে এসেছে এখানে।মেয়েটা অনেক সুন্দরী বললে ভুল হবে অসম্ভব সুন্দরী একটা মেয়ে যানি না মাথার তাঁর গুলো এত লুজ কেন ভগবানি জানে,কিছু বলেই ক্ষপে যায়।
.
পরেদিন সকালে চায়ের দোকানে দিকে রওণা দিতেই সবাই আমকে দেখে হাসছে মনে হয় আমি যেন তাদের কাছে জোকার হয়ে গেছি আর আমি তাদের মজা দিয়ে যাচ্ছি।কিছু বুঝতে পারলাম না।হটে যেতেই নীলের ডাক,ও বলাই হয়নি নীল আমার অনেক ভালো বন্ধু।
~দোস্তো ভিডিও টা কিন্তু সেই ছিলো(নীল)
~এই কিসের ভিডিওর কথা বলিস(নিলয়)
~তোর দেখছি অনেক উন্নতি হয়েছে,
~মানে আর কি সব আবোল তাবোল বলছিস,
~ওই মেয়েটা কে?
~এই কোন মেয়ে?
~যার কাছে ক্ষমা চাইলি,দোস্ত মেয়েটা কিন্তু সেই!
~কি বলিস
~দেখ ভিডিওটা
~দেখি, আমি অবাক নুপুরে কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম সেটা ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে আপলোড দিছে, তাই তো বলি বোন এত মিষ্টি করে কথা বলে কেন আর আমার মোবাইল ফোন চাই ছিলো বা কেন?
.
এই মেয়েটাকে একটা শিখা দেওয়া উচিৎ।সেই দিন থেকে টম অ্যান্ড জেরী যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো।নুপুর আমাকে সহ্য করতে পারে না আমিও নুপুরকে সহ্য করতে পারিনা, বন্ধুরা সবাই মিলে অনেক প্লানিং করতে থাকলাম কিভাবে একটা শিক্ষা দেওয়া যায় নুপুরকে
.
কিছু দিন পর চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিতে ছিলাম।হঠাৎ নুপুর আমাকে ডাকছে।বন্ধু মেয়েটাকে উচিৎ শিখা দিতে হবে,
~দেখ আমি কি করি(নীল)
~ওকে(নিলয়)
নীল নুপুরে সামনে গিয়ে,
.~আপনি নুপুর তাইনা(নীল)
~হুম(নুপুর)
.~নিলয় আপনাকে অনেক ভালোবাসে।
.~আপনার বন্ধুর কে বলে দিবেন এই রকম কথা যদি মুখে অানে ভুলেতেও সঙ্গে সঙ্গে মুখ শিলাই করে দিবো, বুঝলেন?
নীল আমার উপকার করতে গেয়ে এমন বাশ দিবে ভাবিনি।তার পর মেয়েটা আমার দেখে চোঁখ বড় করে কিছুক্ষন তাঁকিয়ে থাকার পর চলে গেলে।তার চোঁখরে সাইজ দিকে বুঝতে পারলাম আমি শেষ।সেই ভয়ে বাড়ি যাবো কি না ভাবতে ভাবতে রাতে বাড়ি গেলাম।কলিং বেলের সুইচ দিতেই নুপুর দরজাটা খুলে দিলো।
.
~এখন তোমার আসার সময় হলো(নুপুর)
~ভুতের মুখে রাম নাম শুনছি মনে হয়,(আপনে থেকে ডাইরেক্ট তুমি বেপারটা অদ্ভুত)
~কি হলে কথা বলো না কেন?
~বেশি দেরি হয়ে গেছে কি?(নিলয়)
~না দেরি হবে কেন?এখনত সন্ধ্যা?
~সরি,আপনি এখনো ঘুমাননি?
~তোমার জন্য বসে আছি
~কেন?
.~অ্যান্টির হুকুম।
,~মানে?
~অ্যান্টি বাসাই নেই তাই অ্যান্টির কাজ টা আমি করছি।
.~মা কোথায় গেছে?
.~বিয়ে বাড়িতে গেছে।
.~ও,তা আপনি যাননি কেন?
.~মথাটা ব্যাথা করছে
.~ও
.~খেয়ে এসেছেন কিছু?
.~না।
.~তা কেন করে আসবে,যত জ্বালা হয়েছে আমার
.~মানে?
.~বাসায় কিছুই রান্না করা নেই,
.~ও,থাক তাহলে আজ না হয় উপবাসি থাকবো?
~কিছুই ঠিক নেই বুঝলে?
~মানে?
~তুমি দুই মিনিট বসো আমি যাচ্ছি আর আচ্ছি।
~আপনার না মথা ব্যাথা করছে?
~তুমি চুপ করে বসো
.
মেয়েটা গেলো না গেলো দেখি আসার নাম নেই, রান্না ঘরে যে দেখি মেয়েটা হাত পুড়ে রান্না করছে।আজ মনে হয় সূর্য অন্যদিকে ওঠেছে তার কিছুক্ষন পর মেয়েটা রান্না নিয়ে হাজির
.
~এই বার শুরু করে দেও(নুপুর)
~আমি কিছুটা আবাক!(নিলয়)
~কি হলো আর কত দেখবে, এই বার শুরু করো,না হলে ঠান্ডা হয়ে যাবে?
~ভাবছি খাওয়া কি যাবে?
~এই মিস্টার আমি অনেক ভালো রান্না করি বুঝলেন
~সেটা দেখতেই পাচ্ছি
~আর সব টুকু খেতে হবে
~হুম,
~রান্না কেমন হয়েছে?
~এক কথায় অসাধারণ!
~ধন্যবাদ,আর তুমি তখন থেকে আপনি আপনি বলছো কেনো তুমি বলতে পারো না?
~ওকে,এর পরে চেষ্টা করবো।
.
সত্যি মেয়েটা অনেক ভালো রান্না করে তা বলার মতো না,আজ নুপুরকে যতই দেখছি ততোই অবাক হয়ে যাচ্ছি।যেখানে তিতো তিতো কথা বলার কথা সেখানে মিষ্টি করে কথা বলছে ভাবতেই পারছি না মনে হয় সপ্ন দেখছি।নীল আমাকে বাশ দিতে গিয়ে মনে হয় ভালোই করেছে,শুধু নীলকে গালি দিলাম।
.
সকালে ঘুম থেকে ওঠেত না ওঠেতেই মায়ের ডাকা ডাকি শুরু হয়ে গেলো,মনে হয় বিয়ে বাড়ি থেকে এসে গেছে,
.
~তুই মানুষ হবি না কোন দিন?(মা)
~আমি আবার কি করলাম।(নিলয়)
~কিছু দিনের জন্য নুপুর এখানে বেরেতে এসেছিলো তুই কি করলি ঝগড়া করলি।মেয়েটা সেইজনে এখান থেকে চলে গেছে।
~নপুর চলে গেছে?
~তোর সাথে ঝগড়া করার জন্য থাকবে?
~থাকলে কিন্তু মন্দ হত না?
~আমার সামনে থেকে দূর হয়।
.
মনটা অনেক খারাপ করে ছাঁদে বসে ছিলাম। কারন আজকের পর থেকে হয়তো টম জেরী যুদ্ধটা আর হবেনা হয়তো।
~ভাইয়া,নুপুর আপু এই চিঠিটা তোকে দিয়ে গেছে(ছোট বোন)
.
চিঠি টা খুলতেই
.
তুমি একটা গাধা না ভীতুর ডিম,কোনটা বলবো বুঝতে পাড়ছি না একটা মেয়েকে ভালোবাসতে পারো বলতে পারো না,আমি বলে দিলাম ভালোবাসি।আজব তো এখনো বসে আছো,একবার বাই বলতে আসবে না?
~এই ভাইয়া আর কত বসে থাকবি যা, নুপুর আপুর কাছে।এখন না গেলে নুপুর আপু কিন্তু বিদেশ চলে যাবে।(ছোট বোন)
.
তখন কি কারণে ছুঁটে গিয়েছিলাম জানি না,শুধু ছুঁটে গেয়েছিলাম মাইলের পর মাইল।যখন এয়ারপোর্ট পৌঁছায় তখন অনেক দেরি হয়েছিলো।প্লেনটা ইতি মধ্যে নীল আঁকাশে মাঝে হারিয়ে গেছে।ভাগ্যিস যদি পাখি হতাম তোমার পিছু পিছু উড়ে যেতাম আর বলতাম মিথ্যা হলেও ভালোবাসি তোমাকে।
বুঁকে হাজার ব্যাথা নিয়ে বাসায় ফিরে কলিং বেলে সুইচ দিতেই নুপুর দরজটা খুলে দিলো কিছুটা অবাক হয়ে যায়,
~তুমি যাওয়নি!(নিলয়)
~গেলে ভালো হয়ত মনে হয়?(নুপুর)
~তা কেন হবে?তা চিঠিতে লেখেছিলে?
~একটু মজা করলাম তোমার সাথে,
~ও,
~তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?
~হুম।
.~হুম মানে কি?একটু ভালো করে বলতে পারো না?
.~তোমাকে অনেক ভালোবাসি,
.~অনেক কতটা?
.~না মানে,ওজন করে দেখা হয়নি?
.~আজব তো ওজন না করেই ভালেবাসতে এসেছো?
.~তাহলে
.~যে দিন কত ভালোবাসো বলতে পারবে সেই দিন আমার সামনে আসবে।
.~কথা শুনে চলে যতেই নুপুর জড়িয়ে ধরলো
.~তুমি কোথায় যাও?
.~তুমি তো বলে ভালোবাসা ওজন করতে তাই দেখি ভালোবাসা ওজন করার যন্ত্র আছে কি না?
.~হাইরে গাধা,কথাটা মজা করে বলেছি,আর তোমাকে ওজন করতে হবে না, না হয় একটুকুুই ভালোবাস দিয়ও?
.~আচ্ছা তোমাকে একটুকুুই ভালোবাস দিবো।
~ওই আর অনেক ভালোবাসা আর একজনকে দিবার মতলব,
আমি কিছুই বুঝি না?
.~আচ্ছা, তোমাকে অনেক,একটু সব ভালোবাস দিবো।এই বার খুশি?
~না,
~আবার কি হলো?
.~দেখো না রোমান্টিক মুভি শেষে নায়ক নায়িকা দুজনকে জড়িয়ে ধরে আর তুমি কি করছো ক্যেবলা কান্তের মত দাড়ায়ে আছো।
~এখন জড়িয়েও ধরতে হবে?
~হুম
~এই তোমাকে জড়িয়ে ধরতে বলেছি চোর ধরতে বলি নি?
~ও সরি(হঠাৎ কিছু পাওয়ার খুঁশিতে বেশি শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছিলাম)
.এই ভাবে শুরু নতুন এক লাভ স্টোরি যেখানে একটু নয় অনেক ভালোবাসা দিয়ে তৈরি সপ্নের সাজানো ঘর।
No comments: