অপেক্ষার_শেষ_প্রহর
ধুর!!বারোহাত শাড়ি যে কি করে মানুষ গায়ে জড়িয়ে রাখে কে জানে??
অসহ্যকর!অথচ আজ থেকে এই বারোহাত শাড়ি পড়েই থাকতে হবে সালহাকে।আদনান শাড়ি পছন্দ করে।এখন থেকে প্রত্যেকদিন সালহাকে শাড়ি পরতে হবে বলেছে আদনান।
এঙ্গেজমেন্টের দিন নাকি সালহাকে নীল শাড়িতে অপ্সরীর মত লেগেছিল।আদনান চোখ ফেরাতে পারছিলনা সেদিন।আজকের শাড়িটা খয়েরী রঙের।আদনান নিজে পছন্দ করেছে এই শাড়িটা।
আদনানের সঙ্গে সালহার যেদিন প্রথম দেখা হয়েছিল সেদিন আদনান সালহাকে বলেছিল,এই মেয়ে তুমি কি জানো তুমি যে অসম্ভব সুন্দরী?তবে এই সৌন্দর্যকে আরো দ্বিগুণ বাড়াতে পারতে,যদি শাড়ি পরতে।
-
অপরিচিত একটা ছেলের মুখে এমন কথা শুনে সালহা যতটানা হতবাক হয়েছে তার চেয়েও বেশি লজ্জা পেয়েছে।সেদিন সালহা বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল রাঙামাটি।সালহার বন্ধু রিয়াদের কাজিন আদনান।রিয়াদের সঙ্গে সেদিন আদনান রাঙামাটি গেল।সেখানেই সালহার সঙ্গে পরিচয়।
-
সালহার প্রথম রূপদর্শনে আদনান মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল।পাহাড়ের কোল ঘেষে যখন সালহা দুইহাত মেলে মুক্ত বাতাসের ঘ্রাণ নিচ্ছিলো তখন আদনানের মনে হয়েছিল পাহাড়িয়া এক অপ্সরী পাহাড়ের বুকে খেলা করছে।
সারাদিন ঘুরে বেড়ানোর পর সবাই ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল।সালহা হাঁটতে পারছিলনা।পায়ে কয়েকটা ফোসকা পড়ে গিয়েছিল তার।সালহাকে আদনান আগ বাড়িয়ে বললো,তুমি জুতা খুলে হাঁটো।তাহলে ব্যাথা কম পাবে।সালহা তাই করলো।
-
আদনান সালহাকে অবাক করে দিয়ে সালহার হাত থেকে জুতা জোড়া নিজের হাতে নিয়ে পাশাপাশি হাঁটতে লাগলো।সালহা অবাক হয়ে গেল।মাঝে মাঝে দু'জন দু'জনকে আড়চোখে দেখছিল,কখনো বা চোখে চোখ পড়ে যাচ্ছিল।সেদিন আদনানের প্রতি সালহার যে এ্যাট্রাকশন তৈরি হলো সেই এ্যাট্রাকশন থেকেই তৈরি হলো ভালোবাসা।
-
দু'জন দু'জনের জন্য আট বছর ধরে অপেক্ষা করলো।তাদের এই আট বছরের অপেক্ষা শেষ হতে আর মাত্র ঘন্টা দুয়েক বাকি।সালহা আর আদনান তাদের ভালোবাসার পরিপূর্ণ রূপ দেখার অপেক্ষায়।আজ তাদের বিয়ে।সালহার শাড়ি পরা শেষ।হালকা মেকআপ করা বাকি আছে।হঠাৎ করে বাইরে চিৎকার শুরু হলো।সালহার হার্টবিট বেড়ে গেল।
-
ওইতো আদনানরা এসে গেছে।আর কয়েক মুহূর্ত পরেই অপেক্ষার পালা শেষ।আদনান সালহা দাঁড়িয়ে আছে অপেক্ষার শেষ প্রহরে।
লেখিকা:-ফারজানা আক্তার
No comments: